info@roadofit.com 01612920677
January 01, 1970 - BY BD 24 Live

আট বছর পর 'সিডরম্যান' জয়দেব দত্ত হত্যার বিচার চেয়ে ছেলের মামলা, ১৪ জন আসামি

আট বছর পর 'সিডরম্যান' জয়দেব দত্তকে হত্যার বিচার চেয়ে বৃহস্পতিবার তাঁর ছেলে প্রসেনজিৎ দত্ত আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় নিহতের শ্যালক সঞ্জীব দাস, তালতলী উপজেলা পরিষদের সাবেক দুই চেয়ারম্যান রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার ও মনিরুজ্জামান মিন্টু, এবং তিন ইউপি চেয়ারম্যানসহ মোট ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। আদালতের বিচারক মোঃ ইফতি হাসান ইমরান মামলাটি আমলে নিয়ে পটুয়াখালী পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।জানা গেছে, ২০০৭ সালের ১৫ই নভেম্বর প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডর উপকূলীয় অঞ্চল লন্ডভন্ড করে দেয়। ওই ঘূর্ণিঝড়ের রাতে তালতলী উপজেলা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির উপজেলা টিম লিডার জয়দেব দত্ত নিজের জীবন বাজি রেখে সারা রাত উপকূলের হাজার হাজার মানুষকে মাইকিং করে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। তাঁর এমন সাহসী ভূমিকার জন্য ইত্যাদি কর্তৃপক্ষ তাঁকে 'সিডরম্যান' ঘোষণা করে। ওই সময় থেকেই তিনি 'সিডরম্যান' হিসেবে সর্বস্তরের মানুষের কাছে পরিচিতি লাভ করেন।ঘূর্ণিঝড় সিডরের দশ বছর পর, ২০১৭ সালের ২ আগস্ট রাতে তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু তৎকালীন সাংসদ ও বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর হস্তক্ষেপে পরিবার মামলা করতে পারেনি। পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া হয়।এই হত্যার আট বছর পর তাঁর ছেলে প্রসেনজিৎ দত্ত বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন।নিহত জয়দেব দত্তের শ্যালক সঞ্জীব দাশকে প্রধান আসামি করে তালতলী উপজেলা পরিষদের সাবেক দুই চেয়ারম্যান রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার ও মনিরুজ্জামান মিন্টু, তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ছোটবগী ইউপি চেয়ারম্যান তৌফিকুজ্জামান তনু, বড়বগী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন আলম মুন্সি এবং নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দুলাল ফরাজীসহ মোট ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। আদালতের বিচারক মোঃ ইফতি হাসান ইমরান মামলাটি আমলে নিয়ে পটুয়াখালী পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।অভিযোগ রয়েছে, 'সিডরম্যান' জয়দেব দত্ত তালতলী শহরে স্বর্ণের বড় ব্যবসায়ী ছিলেন। এছাড়াও তাঁর তালতলী শহরে কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি ছিল। ওই সম্পত্তি দখল করতেই মামলার প্রধান আসামি নিহত জয়দেব দত্তের শ্যালক সঞ্জীব দাস এবং তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার, মনিরুজ্জামান মিন্টুসহ অন্যান্য আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করেছেন।মামলার বাদী ও নিহত জয়দেব দত্তের ছেলে প্রসেনজিৎ দত্ত বলেন, "বাবার হত্যার ঘটনায় মামলা করতে পারবো তা কোনো দিন ভাবিনি। কিন্তু আল্লাহ সত্য ঘটনা উদ্ঘাটন করবে বলেই আমি মামলা করার সুযোগ পেয়েছি। তিনি আরও বলেন, প্রধান আসামি আমার মামা সঞ্জীব দাশের পরিকল্পনায় আসামিরা আমার বাবার সম্পত্তি দখল করতেই পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। তারা হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, আমার বাবা আত্মহত্যা করেছে বলে অপবাদ দিয়ে তৎকালীন সময়ে মামলা করতে দেয়নি। সাংসদ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর হস্তক্ষেপে দ্রুত লাশের সৎকার করার নির্দেশ দেন। আমার বিশ্বাস আমি বাবার হত্যার বিচার পাব।"মামলার প্রধান আসামি সঞ্জীব দাশ বলেন, "আমাকে হয়রানি করতেই মামলায় আসামি করা হয়েছে।"আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার মোঃ কালাম হোসেন বলেন, "বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পটুয়াখালী পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।"পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পটুয়াখালী-এর পুলিশ সুপার মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, "এখনো আদালতের নথিপত্র পাইনি। আদালতের নির্দেশনা মতে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।"